সুনামগঞ্জ , বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ , ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
হাসপাতাল চালুর দাবিতে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের অনির্দিষ্টকালের ক্লাস বর্জন বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ হাওরে চড়ক উৎসবে মানুষের ঢল ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা, দ্রুত পাকা ধান কাটার আহ্বান বন্যার ঝুঁকিতে হাওরাঞ্চল তিন দপ্তরের ছুটি বাতিল গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহত বেড়ে ৫১ হাজার, নিখোঁজ ১১০০০ ধর্মপাশায় দুই আসামি গ্রেফতার বিএনপি’র ঈদ পুনর্মিলনী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে নববর্ষ উৎসব ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন মে মাসে এই সরকারকে ৫ বছর চাওয়ার কথা আমার নয়, জনগণের : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাগর-রুনি হত্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় পেছালো ১১৮ বার সুনামগঞ্জ শহরের শৃঙ্খলার জন্য অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা নববর্ষের প্রত্যাশা, বিজন সেন রায় বোরো ধান কাটার ধুম, হাওরে বৈশাখী হাসি আমাদের পহেলা বৈশাখ ছাতকসহ দেশের ১০ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিকল্পনা বাতিল ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ

এসএসসি পরীক্ষা, আত্মবিশ্বাসই সফলতার চাবিকাঠি

  • আপলোড সময় : ১০-০৪-২০২৫ ০৯:৫২:৩৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-০৪-২০২৫ ০৯:৫৪:৪৫ পূর্বাহ্ন
এসএসসি পরীক্ষা, আত্মবিশ্বাসই সফলতার চাবিকাঠি
দুলাল মিয়া সুপ্রিয় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিও। আজ ১০ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হলো তোমাদের শিক্ষাজীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষা এসএসসি। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি কর্তৃক গত ১৯ মার্চ, বুধবার প্রকাশিত নতুন সংশোধিত রুটিন অনুযায়ী ২০২৫ সালের এসএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে চলবে ১৩ মে পর্যন্ত। বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিয়ে এবারও শুরু হবে এসএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষ হবে বাংলা (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্রের ও সহজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র দিয়ে। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ২৫ মার্চ প্রকাশিত সর্বশেষ সংশোধিত রুটিন অনুযায়ী ১০ এপ্রিল কুরআন মাজীদ ও তাজভিদ দিয়ে পরীক্ষা শুরু হবে এবং ১৫ মে উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) দিয়ে পরীক্ষা শেষ হবে। নির্দিষ্ট দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৫ মে থেকে ২২ মে পর্যন্ত। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৬ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত। তোমরা জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিবাহিত করছো। দুনিয়াটাই একটি পরীক্ষাক্ষেত্র। জীবনের প্রতিটি ধাপে পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। এ সময়টুকু তোমাদের অত্যন্ত আত্মবিশ্বাস ও সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করতে হবে। পরীক্ষার আগ মুহূর্তে দুশ্চিন্তা না করে সময়ের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল সবারই কাম্য। নিজের সেরাটা দিলেই অর্জন করা যায় কাক্সিক্ষত সাফল্য। এজন্য পরীক্ষার প্রস্তুতিও হওয়া চাই সেরা। এবার এসএসসি পরীক্ষা সব বিষয়ে পূর্ণনম্বর ও পূর্ণসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ নম্বরের বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ৩০ মিনিট এবং ৭০ নম্বরের সৃজনশীল (সিকিউ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। ব্যবহারিক বিষয় সম্বলিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে ২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষায় সময় ২৫ মিনিট এবং ৫০ নম্বরের সৃজনশীল পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। পরীক্ষা বিরতিহীনভাবে প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত সময় পর্যন্ত চলবে। এমসিকিউ এবং সিকিউ উভয় অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। পরীক্ষায় ভালো করার জন্য যেসব বিষয়ের প্রতি যত্মবান হতে হবে- * পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে অবশ্যই পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থী সরবরাহকৃত উত্তরপত্রে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি ওএমআর ফরমে যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই মার্জিনের মধ্যে লেখা কিংবা অন্য কোনো প্রয়োজনে উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না। * সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনি ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় ‘পরীক্ষার্থীর উপস্থিতিপত্র’ রয়েছে। পরীক্ষায় উপস্থিতি নিশ্চিতের জন্য পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই উপস্থিতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে। * পরীক্ষার্থীকে বহুনির্বাচনি, সৃজনশীল / রচনামূলক এবং প্র্যাক্টিক্যাল (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) আলাদাভাবে পাস করতে হবে। * আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। মনে কর, তুমি সবকিছুই পারো, সব তোমার মনে আছে। খাতায় লিখতে পারবে। কোনো অবস্থায়ই মনে থাকবে কিনা; লিখতে পারবো কিনা এমন হতাশায় ভোগবে না। নিজের ওপর পুরোপুরি বিশ্বাস রেখো। * ভালো ফলাফল অর্জনের পূর্বশর্ত হলো শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা। এজন্য অভিভাবককেও ইতিবাচক মনোভাব দেখাতে হবে। শিক্ষার্থীর পড়ালেখার উত্তম পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সন্তানের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যতœশীল থেকে পড়ালেখাসহ প্রতিটি ভালো কাজে সমর্থন, উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিতে হবে। * শিক্ষার্থীর ঘুম ও খাবারে যাতে কোনো অনিয়ম না হয় সে দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। পরীক্ষার তারিখ, বার ও সময় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। সকল দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে। * পরীক্ষার পূর্বের রাতেই প্রবেশপত্র, এডমিট কার্ড, কলম, পেন্সিল, রাবার, স্কেল, ক্যালকুলেটর ও জ্যামিতি বক্সসহ প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো নিশ্চিত হয়ে প্লাস্টিকের একটি সাদা ফাইলে ঢুকিয়ে রাখতে হবে। * শিক্ষার্থীর পঠিত সব বিষয়েরই গুরুত্ব রয়েছে। তাই প্রত্যেকটি বিষয়ে সমান গুরুত্ব দিতে হবে। শেষ মুহূর্তেও মূল বইয়ে গুরুত্ব সহকারে অনুশীলন করতে হবে। পরীক্ষায় কাক্সিক্ষত নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রশ্ন নির্বাচন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি যথার্থ উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকা খুবই জরুরি। * পরীক্ষকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য উত্তরপত্রের ডেকোরেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পৃষ্ঠার ওপরে দেড় ইঞ্চি, নিচে আধা ইঞ্চি, বামে এক ইঞ্চি এবং ডানে আধা ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা খালি রাখতে হবে। একটি উত্তর লেখা শেষে এক থেকে দেড় ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা ফাঁক দিয়ে আরেকটি উত্তর লেখা শুরু করতে হবে। হাতের লেখা স্পষ্ট ও পাঠযোগ্য হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। ঘষামাজা, কাটাছেঁড়া যথাসম্ভব পরিহার করা উচিত। লেখার ক্ষেত্রে কালো কালির বল পয়েন্ট কলম ব্যবহার করা ভালো। * প্রশ্ন পাওয়ার পর এক থেকে দুইবার খুব মনোযোগ দিয়ে প্রশ্নটি পড়ে নিবে। ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নের উত্তর লেখাই ভালো।পরীক্ষার খাতায় প্রশ্নের নম্বর পৃষ্ঠার মাঝামাঝি লেখাই ভালো। * পরীক্ষা চলাকালীন অবশ্যই ঘড়ি ব্যবহার করতে হবে। মোবাইল ব্যবহার একেবারেই নিষিদ্ধ। পরীক্ষার্থী কোনভাবেই মোবাইল / কোনো ডিভাইস সাথে রাখতে পারবে না। পরীক্ষার্থীরা সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে না। * পরীক্ষার হলে সময় সচেতন থাকা খুবই দরকার। মনে রাখতে হবে, ফুলমার্কস আনসার করা খুবই জরুরি। প্রতিটি প্রশ্নের সময় ভাগ করে নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের অন্তত পাঁচ মিনিট আগেই লেখা শেষ করতে হবে। * পরীক্ষার হলে রিভিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। লেখা শেষ করেই পুরো উত্তরপত্র রিভিশন দিবে। এতে অনিচ্ছাকৃত অনেক ত্রুটি সংশোধন করতে পারবে। ফলে কাক্সিক্ষত নম্বর পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৫ সালে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড,মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১৯ লাখ ২৮ হাজার ১৮১ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে অধীনে এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন। ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন। পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ২ হাজার ২৯১টি, প্রতিষ্ঠানসংখ্যা ১৮ হাজার ৮৪টি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী রয়েছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন। ছাত্র ১ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৩ জন এবং ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮৩৩ জন ছাত্রী। ওই বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ৭২৫টি এবং প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯ হাজার ৬৩টি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী রয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন। ছাত্র ১ লাখ ৮ হাজার ৩৮৫ এবং ৩৪ হাজার ৯২৮ জন ছাত্রী। আত্মবিশ্বাসই সফলতার চাবিকাঠি। নিজের সক্ষমতায় বিশ্বাস রাখ। ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে প্রত্যেকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা কর। এতে নিজের শক্তি বাড়বে। ধরা দেবে কাক্সিক্ষত সফলতা। সুষ্ঠু ও ইতিবাচক পরিবেশে পরীক্ষা সম্পন্ন হোক। সবার জন্য অনিঃশেষ ভালোবাসা ও শুভকামনা। লেখক : প্রভাষক(বাংলা বিভাগ), জাউয়া বাজার ডিগ্রি কলেজ, ছাতক, সুনামগঞ্জ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য